পরকীয়ার জেরে মেয়েকে খুন, প্রেমিকসহ মায়ের যাবজ্জীবন

পরকীয়ার জেরে মেয়েকে খুন, প্রেমিকসহ মায়ের যাবজ্জীবন

অনলাইন ডেস্ক:


আড়াই বছরের মেয়ে ইসরাত জাহান রিয়াকে খুনের দায়ে মা রোজিনা আক্তার ও তার পরকীয়া প্রেমিক সুলতান মাহমুদকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দিয়েছেন আদালত। বৃহস্পতিবার ঢাকার বিশেষ জজ আদালত-৪ এর বিচারক সৈয়দ আরাফাত হোসেন এ রায় ঘোষণা করেন। রায়ে যাবজ্জীবন কারাদণ্ডের পাশাপাশি আসামিদের ৫০ হাজার টাকা করে অর্থদণ্ড, অনাদায়ে আরও ছয় মাসের কারাদণ্ড দেওয়া হয়।

রায় ঘোষণার সময় সুলতান মাহমুদকে কারাগার থেকে আদালতে হাজির করা হয়। রায় ঘোষণা শেষে সাজা পরোয়ানা দিয়ে তাকে কারাগারে পাঠানো হয়। এ ছাড়া অপর আসামি রোজিনা আক্তার পলাতক থাকায় তার বিরুদ্ধে সাজা পরোয়ানাসহ গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করেন আদালত।

জানা গেছে, আড়াই বছরের মেয়ে ইসরাত জাহান রিয়াকে নিয়ে রোজিনা আক্তার ২০১২ সালের ৩ জানুয়ারি বেলা ১১টার দিকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ  হাসপাতালের গাইনি ওয়ার্ডে ডাক্তার দেখানোর জন্য যান। ডাক্তারের রুমে প্রবেশ করার সময় আয়া সেলিনা বেগম মেয়েকে নিয়ে যেতে বাধা দেন। রিয়াকে তিনি আয়ার কাছে রেখে ডাক্তারের রুমে প্রবেশ করেন। ২০ মিনিট পর রোজিনা আক্তার বের হয়ে মেয়ে রিয়াকে দেখতে না পেয়ে আয়ার কাছে জিজ্ঞাসা করেন রিয়া কোথায়। আয়া তার মেয়েকে দেখেননি বলে জানান। রোজিনা আক্তার তার মেয়েকে খোঁজাখুজির এক পর্যায়ে অন্য এক রোগী জানান, কালো কোর্ট পরিহিত এক ব্যক্তি তার মেয়েকে বাবা পরিচয় দিয়ে নিয়ে গেছে। নিয়ে যাওয়ার সময় তার মেয়ে অনেক কান্নাকাটি করেছে। রোজিনা আক্তার বিষয়টি তার স্বামী নুরুল ইসলামকে জানান। নুরুল ইসলাম ঢামেক হাসপাতালে এসে মেয়েকে খোঁজার পর দুপুর পৌনে ২টার দিকে হাসপাতালের নিউক্লিয়ার আল্ট্রাসাউন্ড সেন্টার, ১২তলা দালানের তৃতীয় তলায় মরদেহ দেখতে পান।

এ ঘটনায় ৫ জানুয়ারি নুরুল ইসলাম অজ্ঞাতনামাদের আসামি করে শাহবাগ থানায় মামলা করেন। মামলার তদন্তে সুলতান মাহমুদকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। তিনি আদালতে দেওয়া স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দিতে জানান, রোজিনা আক্তারের সঙ্গে পরকীয়া প্রেম ও অনৈতিক সম্পর্কের কারণে রিয়াকে শ্বাসরোধে হত্যা করেছেন। মামলাটি তদন্ত করে ২০১২ সালের ২৬ নভেম্বর মামলার তদন্ত কর্মকর্তা পুলিশের গোয়েন্দা ও অপরাধ বিভাগের পরিদর্শক তপন চন্দ্র সাহা দুজনকে অভিযুক্ত করে আদালতে অভিযোগপত্র দাখিল করেন। পরের বছরের ৪ সেপ্টেম্বর আসামিদের বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন করেন আদালত। মামলার বিচার চলাকালে আদালত ২৬ জন সাক্ষীর মধ্যে ১০ জনের সাক্ষ্যগ্রহণ করেন।

পোষ্টটি শেয়ার করুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *




© All rights reserved © 2023 tulshigonga24.com privacy-policy Contact Us About Us
Design BY NewsTheme